
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২ বছরের এক শিশুও আছে। এ ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানা গেছে।
সামরিক বাহিনীকে নামানো হয়েছে রাজধানীতে। বিক্ষুব্ধ তরুণ-তরুণীরা কারফিউ ভেঙে পার্লামেন্ট এলাকার সুরক্ষিত অঞ্চলে ঢুকে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান, টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে পুলিশ। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারী সংসদ ভবন চত্বরে প্রবেশ করতেও সক্ষম হয়।
কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসক ছাবিলাল রিজাল জানান, নতুন নির্দেশনায় বিকাল ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকবে। প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন, সিংহ দরবার, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বাসভবনসহ উচ্চ নিরাপত্তার বিভিন্ন এলাকা চলাচল ও সমাবেশের জন্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কেন বিক্ষোভ
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সরকারের পদক্ষেপ মূলত বাকস্বাধীনতা দমনের প্রচেষ্টা। দুর্নীতি ও রাজনৈতিক পরিবারের প্রভাবশালীদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের ভিডিও টিকটকে ভাইরাল হওয়ায় ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
২৪ বছর বয়সী ছাত্র যুবরাজ ভাণ্ডারি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধই একমাত্র কারণ নয়, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি, যা নেপালে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।
আরেক শিক্ষার্থী ইক্ষামা তুমরোক বলেছেন, আমরা স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে। পরিবর্তন চাই, এ প্রজন্মেই সেটি ঘটতে হবে।
সরকারের ব্যাখ্যা
গত মাসে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সাত দিনের মধ্যে নেপালে নিবন্ধিত হয়ে স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই এ সিদ্ধান্ত আসে।
সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং এর সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, চলমান সংকট নিরসনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই প্রত্যাহার করা হতে পারে।
নেপালে এর আগেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। ২০২৩ সালে অনলাইন জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে টেলিগ্রাম সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। আর টিকটক নয় মাস নিষিদ্ধ থাকার পর গত বছর স্থানীয় নিয়ম মেনে নিলে তা পুনরায় চালুর অনুমতি দেওয়া হয়।
সূত্র: এনডিটিভি ও কাঠমান্ডু পোস্ট
আপনার মতামত লিখুন :