শুষ্ক ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহার


আমাদের যশোর প্রকাশের সময় : আগস্ট ১৪, ২০২৫, ২:২৭ অপরাহ্ণ / 4
শুষ্ক ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহার

অনেকেরই ঠোঁট স্বাভাবিকভাবেই শুষ্ক থাকে, আর তার ওপর লিপস্টিক পরলে রং ফেটে যায়, দাগ পড়ে, এমনকি আরও বেশি রুক্ষ দেখায়। ফলে যারা প্রতিদিন লিপস্টিক ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য এটি বড় ঝামেলার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তবে শুষ্ক ঠোঁটেও সুন্দরভাবে লিপস্টিক পরা সম্ভব, শুধু একটু যত্ন এবং সঠিক প্রস্তুতি নিতে হবে।

রাতের যত্ন: হাইড্রেটিং লিপ মাস্ক ব্যবহার

দিনের শুরুটা ভালো করার জন্য রাত থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জোশুয়া জেইখনার পরামর্শ দেন, “ঘুমানোর আগে সাধারণ লিপ বাম নয় বরং গভীর ময়েশ্চারাইজিং ক্ষমতাসম্পন্ন ‘হাইড্রেইটিং লিপ মাস্ক’ ব্যবহার করতে হবে। এটি সাধারণত ঘন হয় এবং এতে বেশি ‘এমোলিয়েন্ট’ মানে আর্দ্রতা ধরে রাখার উপাদান থাকে, যা সারা রাত ধরে ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে।”

রাতে ত্বক স্বাভাবিকভাবেই পুননির্মাণ হতে থাকে। তাই এই সময়ে পুষ্টিকর উপাদান দিলে ঠোঁটের বাইরের আবরণকে মজবুত করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে।

সকালে এক্সফোলিয়েশন: লিপ স্ক্রাব ব্যবহার

শুষ্ক ঠোঁটে চামড়া ওঠা এবং রুক্ষতা দূর করতে সকালে হালকা এক্সফোলিয়েশন জরুরি। এজন্য চিনি-ভিত্তিক লিপ স্ক্রাব ব্যবহার করা ভালো। কারণ এটি কোমলভাবে মৃত কোষ সরিয়ে দেয়, আবার অতিরিক্ত ক্ষতিও করে না।

ডা. জোশুয়া জেইখনার সতর্ক করে বলেন, “লিপ স্ক্রাব বেশি ব্যবহার করলে বা খুব জোরে ঘষলে ঠোঁটের বাইরের পাতলা স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা শুষ্কতা ও জ্বালা বাড়িয়ে দেয়।”

তাই সপ্তাহে দুতিনবারের বেশি স্ক্রাব করা উচিত নয়।

লিপ বাম দিয়ে প্রাইম

লিপস্টিক দেওয়ার আগে ঠোঁটকে নরম ও মসৃণ করতে লিপ বাম ব্যবহার করা অপরিহার্য। এটি এক ধরনের প্রাইমারের মতো কাজ করে, যা রংকে সমানভাবে বসতে সাহায্য করে।

তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, লিপ বাম লাগানোর পর সঙ্গে সঙ্গে লিপস্টিক না দেওয়াই ভালো। অন্তত ১০ থেকে ২০ মিনিট আগে লিপ বাম মাখতে হবে। যাতে এটি ঠোঁটে ভালোভাবে শোষিত হয়।

অনেকেই মেইকআপের শুরুতেই এই ধাপ করেন, ফলে লিপস্টিক দেওয়ার সময় পর্যন্ত ঠোঁট প্রস্তুত হয়ে যায়।

হাইড্রেইটিং লিপস্টিক বেছে নেওয়া

শুষ্ক ঠোঁটের জন্য সব লিপস্টিক সমান নয়। ম্যাট ফিনিশযুক্ত লিপস্টিক সাধারণত ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে তোলে।

এর বদলে এমন লিপস্টিক বেছে নিতে হবে, যাতে আর্দ্রতা ধরে রাখার উপাদান থাকে। যেমন- হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, ভিটামিন ই, প্রাকৃতিক তেল বা উদ্ভিজ্জ মোম।

এ ধরনের লিপস্টিক শুধু রংই দেয় না, বরং ঠোঁটকে সারা দিন নরম রাখে। রংয়ের পাশাপাশি ঠোঁটের আর্দ্রতা বাড়ায় এমন লিপস্টিক ব্যবহার করতে হবে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হাইড্রেইটিং লিপস্টিক, যা সব ধরনের ত্বকের রংয়ে মানিয়ে যায়।

‘টু-ইন-ওয়ান লিপস্টিক’ এবং লিপ বাম, যাতে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ও পেপটাইড থাকে। এসব উপাদান ঠোঁটের সূক্ষ্ম রেখা কমায়।

সেমি-ম্যাট হলেও আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদানে ভরপুর লিপস্টিক মাখতে হবে। যাতে ভিটামিন সি এবং ই আছে, যা ঠোঁটকে ‘বাউন্সি’ ও তরুণ দেখায়।

৯২ শতাংশ প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি লিপস্টিক, যা নরম, মাখনের মতো ভাব দেয়।

ভিটামিন ই সমৃদ্ধ টিন্টেড লিপ বাম-লিপস্টিক ফিউশন, যা ঠোঁটকে হালকা ফোলাভাব দেয় এবং আঠালো অনুভূতি ছাড়াই আরামদায়ক থাকে।

রং ঠিক রাখার কিছু কৌশল

  • লিপ লাইনার ব্যবহার করলে লিপস্টিক ছড়িয়ে পড়ে না এবং বেশি সময় স্থায়ী হয়।
  • খুব শুষ্ক আবহাওয়ায় ম্যাটের বদলে ক্রিমি বা সাটিন ফিনিশ বেছে নিতে হবে।
  • সারাদিনে একাধিকবার হালকা ‘টাচ-আপ’ জরুরি। তবে প্রতিবারের আগে সামান্য লিপ বাম লাগিয়ে নিতে হবে।

যেসব ভুল এড়িয়ে চলতে হবে

  • ফাটা ঠোঁটে সরাসরি লিপস্টিক লাগানো যাবে না।
  • অতিরিক্ত স্ক্রাব করা যাবে না।
  • পানিশূন্য থাকা যাবে না। কারণ পর্যাপ্ত পানি না পান করলে ঠোঁটও শুষ্ক হয়ে যায়।