
দাম্পত্য জীবন শুধু দুটি মানুষের সহাবস্থান নয়, এটি দুটি আত্মার একাত্ম হওয়ার এক পবিত্র বন্ধন। এই সম্পর্কের ভিত্তি হলো পারস্পরিক বোঝাপড়া, ভালোবাসা এবং একে অপরের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়া। শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই এই বোঝাপড়া জরুরি। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর যে দায়িত্বগুলো রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো তার ডাকে সাড়া দেওয়া, যা দুজনের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করে তোলে।
একে অপরের পাশে থাকা
ইসলামে এই বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু একটি কর্তব্য নয়, বরং এটি একটি পবিত্র সম্পর্কের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার প্রতিফলন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ বিষয়ে বলেছেন, ‘কেউ যদি স্ত্রীকে নিজ প্রয়োজনে ডাকে, স্ত্রী চুলোর পাড়ে থাকলেও স্বামীর ডাকে সাড়া দেওয়া উচিত।’ এর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে, বৈবাহিক জীবনে একে অপরের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া কতটা জরুরি। এটি এমন এক গভীর বোঝাপড়া, যেখানে একজন অন্যজনের কাছে নিজেকে মেলে ধরতে পারে।
ভালোবাসা ও সম্মানের বন্ধন
স্বামীর জৈবিক প্রয়োজনকে অবহেলা করা দাম্পত্য সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই রাসুল (সা.) এ বিষয়ে আরও বলেছেন, ‘স্বামী যদি স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে আর সে আসতে অস্বীকার করে, সকাল পর্যন্ত ফেরেশতারা তার ওপর লানত করেন।’ এই বর্ণনাটি থেকে বোঝা যায়, এ ধরনের অবহেলা শুধু সম্পর্কের ফাটলই ধরায় না, বরং এটি একটি পবিত্র বন্ধনের প্রতি অসম্মানও বটে। যখন স্ত্রী স্বামীর ডাকে সাড়া দেয়, তখন সেটি শুধু একটি শারীরিক সম্পর্ক নয়, বরং ভালোবাসার এক গভীর প্রকাশ।
শুধু কর্তব্য নয়, বরং আত্মার টান
এ বিষয়টিকে শুধু একটি বাধ্যবাধকতা হিসেবে না দেখে, বরং ভালোবাসা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে দেখা উচিত। যখন একজন স্ত্রী তার স্বামীর মন ও শরীরের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেয়, তখন স্বামীও তার প্রতি আরও বেশি যত্নশীল ও অনুরাগী হয়ে ওঠে। এটি একটি সুখী ও সুস্থ দাম্পত্য জীবনের জন্য অপরিহার্য। একে অপরের প্রতি এ ধরনের সংবেদনশীলতা এবং সাড়া দেওয়ার মানসিকতা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধুত্ব এবং গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি করে, যা জীবনের প্রতিটি ধাপে তাদের একে অপরের পাশে থাকতে সাহায্য করে।
আপনার মতামত লিখুন :