
নির্বাচন কমিশন কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেছেন, আমরা নির্বাচনের সময় কর্মকর্তাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেবো না বা অন্যায় কোনো হুকুম দেবো না। আমাদের নির্দেশনা যা যাবে সেটা সেভাবে পালন করবেন। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ‘কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবেন না, কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। সম্পূর্ণভাবে নিজের সিদ্ধান্তে আইন অনুযায়ী অটল থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব। নির্বাচন কমিশনও কিন্তু কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। সুতরাং আমরা আপনাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেবো না। অন্যায় কোনো হুকুম দেবো না। এটা আপনারা ধরে রাখতে পারেন যে আইন অনুযায়ী আমাদের নির্দেশনা যাবে বা আপনারা সেটা সেভাবে পালন করবেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা ন্যায়ভাবে আইনসম্মতভাবে নিউট্রালি প্রফেশনালি কাজ করবেন বা পালন করবেন। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি।’
সিইসি বলেন, ‘আমাদের দেশের যে এই দুরাবস্থার একটা মূল কারণ হলো আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি যে, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নই। যে জাতি আইনের প্রতি যতটা শ্রদ্ধাশীল সেই জাতি তত সভ্য বলে আমরা মনে করি।
সভ্য দুনিয়া কিন্তু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। আমাদের এই কালচারটা কাল্টিভেট করতে হবে।’
নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা রুল অব ল চাই। আমরা চাই সর্বস্তরের সবাই আইন মেনে চলব, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকব এবং আইনকে এস্টাবলিশ করব সর্বক্ষেত্রে এবং আমার গন্ডির মধ্যে যে কাজ থাকবে সেখানে আমি আইনকেই বাস্তবায়ন করব। আমরা চাইবো আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্যে সমন্বয়টা একটা বড় জিনিস। তা আপনারা যেহেতু উপজেলা পর্যায়ে নিয়োজিত আছেন এবং সমন্বয়ের দায়িত্বটা মূলত আপনাদের ওপরে নির্ভর করে। যারা ইউএনও আছেন উপজেলা পর্যায়ে সমন্বয়টা আপনারাই করে থাকেন। সুতরাং নির্বাচনের সময়ও এ সমন্বয়টা খুবই জরুরি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় আমাদের প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়, পুলিশ অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়, আমাদের কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের সঙ্গে সমন্বয়, জেলার যে মনিটরিং সেল থাকবে ইলেকশন মনিটরিং সেল থাকবে, ওর সঙ্গে সমন্বয়; এ সার্বিক সমন্বয়টা আপনাদের খুব সিরিয়াসলি পার করতে হবে। এটার দায়িত্ব আপনাদের নিজের কাঁধে নিতে হবে। যেকোনো ক্রাইসিস হলে প্লিজ ট্রাই টু এড্রেস ক্রাইসিস। শুরুতেই যাতে এটা ট্যাকেল করা যায়, সেই চেষ্টা আপনারা নেবেন।’
সিইসি বলেন, ‘আমাদের ব্রিগেডিয়ার সাহেব নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন যে- ওই মোবাইল ম্যাজিস্ট্রেসি, অনেক সময় তারা যায় সবকিছু শেষ হওয়ার পরে। তখন দেখবেন যে আর কেউ নেই। সবাই মারামারি করে ভোটের কেন্দ্র দখল করে বাক্স দখল করে বাড়ি চলে গেছে। আর আপনি গিয়ে হাজির হলেন, সেটা যাতে না হয়, এটা আপনাদের এনসিওর করতে হবে।’
ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :